বহুল জনপ্রিয় পানীয় “কফি” ১৪০০ সালে ইয়েমেনের মুসলমানরা আবিস্কার করেছিলো

বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিদিন পায় ১৬০ কোটি কাপ কফি পান করা হয়ে থাকে । বিলিয়নের মত মানুষের কাছে কফি পান রীতিমত নিত্যদিনের ব্যাপার । তবে আমরা অনেকেই এই কফি প্রচলনের ইতিহাসটা জানি না ।
ঐতিহাসিক দলিল মোতাবেক , ১৪০০ সালের দিকে ইয়েমেনের মুসলিম সমাজে কফি সর্বপ্রথম জনপ্রিয়তা পায় । কিংবদন্তী অনুসারে , ইয়েমেন কিংবা ইথিওপিয়ার এক মেষপালক হঠাৎ লক্ষ্য করে তার মেষগুলো অজানা এক প্রকার গাছের পাতা খেয়ে সতেজ হয়ে উঠছে । এটা দেখে নিজের উপর ব্যাপারটা পরীক্ষা করার ইচ্ছা জাগে তার । মেষপালক সেই পাতা খায় এবং লক্ষ্য করে এর ফলে তার ক্লান্তি দূর হয়ে সতেজ ভাব লাগছে । এ ঘটনার পর থেকে কফির দানা গরম পানিতে দিয়ে পান করার ব্যপারটা ইয়েমেনে প্রচলিত হয়ে পরে । আর এভাবেই উদ্ভব হয় বর্তমান পৃথিবীর খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়, কফি ।


এ ব্যাপারটা নিশ্চিত যে কফির প্রচলন হয় ইয়েমেন থেকেই এবং ইয়েমেন হয়ে কফি সমগ্র উসমানী খিলাফতে (অটোমান খিলাফত) ছড়িয়ে পরে । এর পর সমগ্র মুসলিম এলাকার গুরুত্বপূর্ন শহরগুলো, যেমন- ইস্তাম্বুল, বাগদাদ, কায়রো, দামাস্কাসে কফিহাউস তৈরি করা হয় । এরপর মুসলিম সভ্যতা থেকে কফি ইতালীর ভেনিস হয়ে ইউরোপে জনপ্রিয়তা অর্জন করে । ইউরোপে কফিকে নিন্দাভরে “মুসলিম ড্রিঙ্ক” নামে ডাকতেন তখনকার ক্যাথলিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা (মুসলিমরা অনেকেই সারারাত জেগে আল্লাহর ইবাদত করতেন । রাত জাগার ক্লান্তি দূর করতে তারা কফি পান করতেন । মূলত এখান থেকেই “মুসলিম ড্রিঙ্ক” নামের উদ্ভব। - অনুবাদক) । কিন্তু ইউরোপের সাধারন জনতা কফিকে খুবই আন্তরিকভাবে গ্রহন করেছিলেন , এবং নিজেদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে নিয়েছিলেন । ১৬০০ শতকে ইউরোপের কফি হাউসগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সরকারের সমালোচনার স্থান হয়ে উঠেছিলো । পরবর্তীতে এ কফিহাউস ভিত্তিক আলোচনাই ইউরোপে অনেক নবজাগরনের পথ সূচনা করেছিলো ।

ইয়েমেন কিংবা ইথিওপিয়ার সেই মেষপালকের হাত ধরেই পরবর্তীতে প্রতিদিন প্রায় ১ বিলিয়ন কাপ কফি ইউরোপের জনসাধারনের রাজনৈতিক চিন্তাধারাকে উজ্জীবিত রাখে । সেই সাথে আমরা বলতে পারি , মুসলিমদের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই পানীয়টি নিঃসন্দেহে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন আবিস্কার ।

No comments

Theme images by imacon. Powered by Blogger.